ক্রিকেটের তিন ডিপার্টমেন্টে ব্যার্থতার করুণ সুর

 

সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ জয়ের মধ্যদিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিতের পর ৯৭ রানের বিশাল হার। এ যেন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের অসহায় আত্মসমর্পণ। প্রথম দুটি ম্যাচেই ছিল ব্যাট বলের দারুণ দাপট। কিন্তু,  আজকে বোলিংয়ে ব্যার্থ হওয়ার পর। ব্যাটিংয়ে আরো বেশি ব্যার্থ। আজকের বাংলাদেশকে দেখে মনেই হচ্ছিলো না, এই দলটি সিরিজ জয় করা দল। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং ক্রিকেটের তিনটি ডিপার্টমেন্টেই সমান্তরালে ব্যার্থ।  এক চামিরাতেই দিশেহারা বাংলাদেশের টপঅর্ডার। তিনি একাই তুলে নিয়েছেন শুরুর তিন ব্যাটসম্যানকে। সিনিয়র চার ক্রিকেটার পারফর্ম করতে না পারলে বাংলাদেশের স্কোরকার্ড কতটা হতশ্রী হয়, আজকের স্কোরকার্ডটা তার বাস্তব প্রমাণ। সিরিজ নিশ্চিত করা দলটি দুইশো রানের গন্ডিও পেরোয়নি।

 



২৮৭ রানের টার্গেটে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই, প্রথম দুই ম্যাচে লিটনের ব্যার্থতায় দলে জায়গা পাওয়া নাইমের ১(২) উইকেট শিকারের মধ্যদিয়ে চামিরার আঘাত। তৃতীয় ওভারে চামিরার দ্বিতীয় বলে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাকিব আল হাসানের ৪(৭) রানে বিদায়। আবারো উইকেটের পতন যেখানে চামিরার শিকার ধীরগতিতে খেলা দলপতি তামিম ইকবাল ১৭(২৯) রানে। উইকেটের পতনের মুখে প্রথম দুই ম্যাচে ভালো খেলা মুশফিক এবারও ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে যেয়েও ২৮ (৫৪) রানে কাটা পড়লেন অভিষিক্ত রমেশ মেন্ডিসের বলে। তারপর মিথুন আলীর পরিবর্তে তৃতীয় ওডিআইতে সুযোগ পাওয়া সৈকত উইকেটে থিতু হয়েও উইকেট উপহার দিয়ে আসলেন রমেশ মেন্ডিসকে যা ছিল ভীষণ দৃষ্টিকটু। ভালো শুরু করা আফিফও বেশিক্ষণ থাকতে পারে নাই, ১৬ (১৭) রানে আউট হয়েছেন হাসারাঙ্গার বলে।আজকেও দলের টপ স্কোকারার বিপর্যয়ের মুখে দলের ত্রাতা মাহমুদউল্লাহ। মাহমুদউল্লাহ দশম উইকেট হিসেবে দলীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ  ৫৩ (৬৩) রান করে ডিকেওয়ালার হাতে ক্যাচ দেন ফেরনান্দোর বোলিংয়ে। এতেই ৪২.৩ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংস থেমে যায় মাত্র ১৮৯ রানে যা বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের অসহায় আত্মসমর্পণকেই নির্দেশ করে।



এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে দুরন্ত সূচনা পায় শ্রীলঙ্কা। কুশল পেরেরা ও গুনাথিলাকার ৮২ রানের উদ্বোধনী জুটিই ছিল শ্রীলঙ্কা দলের ম্যাচ জয়ের টার্নিং পয়েন্ট। এছাড়াও আজকের ম্যাচকে কিছুটা হলেও শ্রীলঙ্কামুখী করেছে ফিল্ডারদের একাধিক ক্যাচ ধরতে না পারা। শক্ত উদ্বোধনী জুটির পর একাধিক বার ক্যাচ মিসে জীবন পাওয়া, ম্যাচ সেরা কুশল পেরেরা খেলেন ১২০ (১২২) রানের কাব্যিক ইনিংস। শ্রীলঙ্কার জয়ের কাব্য রচনায় আরো অবদান ছিল গুনাথিলাকার ৩৯ (৩৩) রান, ধীরস্থির খেলা ধনঞ্জয়া সিলভার ৫৫ (৭০) রান, কুশল মেন্ডিসের ২২ (৩৬) এবং হাসারাঙ্গার ১৮ (২১) রান। ৬ টি উইকেটের ৪ টি উইকেটই নেন স্পিড মাস্টার তাসকিন, ১টি উইকেট আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া শরিফুলের এবং অন্যটি ছিল রান আউট। আজকের ম্যাচে সাকিব, মেহেদী,  মুস্তাফিজরা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেন নাই।


তরুণরা বারংবার সুযোগ পেয়েও ব্যার্থ হচ্ছেন। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের পাশাপাশি দলের জয়ে নিজেদেরকেও উজাড় করে দিতে হবে। আজকে মোসাদ্দেক তার ক্যারিয়ারের ২য় সেরা ৫১ রানের ইনিংস খেলেছেন ঠিকই কিন্তু ইমপ্যাক্ট ছিল না। দলকে সাফল্য এনে দেওয়ার ক্ষেত্রে সিনিয়র ক্রিকেটারদের পাশাপাশি তরুনদেরও ইম্প্যাক্ট ক্রিকেট খেলতে হবে। একজন তামিম, একজন মুশফিক বা সাকিবরা প্রতিদিন পারফর্ম করবে না।





Post a Comment

0 Comments